ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের প্রধান ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস (জর্জ মারিও বার্গোগলিও) মারা গেছেন। সোমবার (২১ এপ্রিল) তিনি মারা যান বলে নিশ্চিত করেছ ভ্যাটিকান। ভ্যাটিক্যানের একটি ভিডিও বার্তার বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবার (২১ এপ্রিল) স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরেই শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন রোমান ক্যাথলিক গির্জার প্রধান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর।
খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের উৎসব ‘ইস্টার’ উদযাপনের পরদিনই মারা গেলেন এই ধর্মগুরু। আগের দিন রোববারই তিনি মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেভি ভ্যান্সের সঙ্গে দেখা করেছিলেন।
পোপ ফ্রান্সিস দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থতায় ভুগছিলেন। দুটি ফুসফুসে নিউমোনিয়ায় পাঁচ সপ্তাহ হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার পর তিনি গত ২৩ মার্চ ভ্যাটিকানে ফিরে আসেন। পোপ হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার ১২ বছর পর দীর্ঘ সময় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।
চিকিৎসকরা প্রথমে তার শ্বাসনালীতে একটি জটিল ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও ফাঙ্গাল সংক্রমণ শনাক্ত করেন। পরবর্তীতে যা দুটি ফুসফুসেই ছড়িয়ে পড়ে এবং নিউমোনিয়ায় রূপ নেয়। রক্তপরীক্ষায় রক্তশূন্যতা, কম প্লেটলেট এবং কিডনি অকার্যকারিতার প্রাথমিক লক্ষণগুলো ধরা পড়ে।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি পোপের শারীরিক অবস্থার আকস্মিক অবনতি হয়। তীব্র কাশির সাথে বমি শ্বাসনালীতে ঢুকে যাওয়ায় তাকে নন-ইনভেসিভ মেকানিক্যাল ভেন্টিলেশন (এনআইভি) মাস্কের সাহায্য নিতে হয়।
যুবক বয়সে তার একটি ফুসফুসের অংশ অপারেশন করে বাদ দেয়া হয়েছিল। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ব্রঙ্কাইটিসের তীব্র উপসর্গ নিয়ে তিনি রোমের জেমেলি বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।
২০১৩ সালের ১৩ মার্চ পোপ নির্বাচিত হন জর্জ মারিও বার্গোগ্লিও। পোপ হিসেবে নির্বাচিত হবার পর নাম পরিবর্তন করে রাখেন ‘ফ্রান্সিস’। আর্জেন্টিনার এই ধর্মযাজক দরিদ্রদের প্রতি সহমর্মিতার জন্য বেশ পরিচিত ছিলেন।
জাঁকজমকপূর্ণ জীবন খুবই অপছন্দ ছিল পোপ ফ্রান্সিসের। এমনকি পূর্বসূরীদের ব্যবহৃত অ্যাপোস্টলিক প্রাসাদের অলংকৃত বাসস্থানে কখনোই বাস করেননি তিনি।
তিনি এমন একটি গির্জার দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন যা শিশুদের যৌন নির্যাতন কেলেঙ্কারির জন্য ব বেশ সমালোচিত ছিল। সেই সাথে ভ্যাটিকানের আমলাতান্ত্রিক কোন্দলে জর্জরিত ছিল। গির্জায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার একটি স্পষ্ট ম্যান্ডেট নিয়েই তিনি পোপ নির্বাচিত হন।