১০:৪০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে জামাতের বৈঠক

ফ্যাসিবাদবিরোধী জুলাই আন্দোলনে জামায়াতের অবদান সবার স্মরণে থাকবে: আলী রীয়াজ

  • রিপোর্টার
  • Update Time : ০৮:২৬:০৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫
  • ১৩ Time View

Oplus_131072

ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে নিরন্তর সংগ্রামে জামায়াতে ইসলামীর অবদান নিঃসন্দেহে সবার স্মরণে থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

শনিবার (২৬ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় সংসদ ভবনের  এলডি হলে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে সূচনা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় তিনি আরও বলেছেন, বিচারিক এবং বিচারিক প্রক্রিয়ার বাইরে বিচারবর্হিভূতভাবে আপনাদের (জামায়াতে ইসলামী) নেতাকর্মীরা নিপীড়ন, অত্যাচারের শিকার হয়েছেন। তারপরও আপনারা সাহসিকতার সঙ্গে তা মোকাবিলা করেছেন, সেই সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছেন।আপনারা যেই ত্যাগ স্বীকার করে দেশকে ধ্বংসের থেকে রক্ষা করছেন এইজন্য জাতি আপনাদেরকে আজীবন স্বরণ রাখবে।  সেজন্য আপনাদের প্রতি আমাদের সবার সমর্থন থাকছে।

অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, গত ১৬ বছর ধরে যখন ফ্যাসিবাদী শাসনের নিপীড়ন বাংলাদেশকে জর্জরিত করে ফেলেছিল, সেই সময় জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা জীবন বাজি রেখে লড়াই করেছেন, গণতান্ত্রিক সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছেন। বিচারিক এবং বিচারিক প্রক্রিয়ার বাইরে বিচারবর্হিভূতভাবে আপনাদের (জামায়াতে ইসলামী) নেতাকর্মী নিপীড়ন, অত্যাচারের শিকার হয়েছেন। তারপরও আপনারা সাহসিকতার সঙ্গে তা মোকাবিলা করেছেন, সেই সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছেন। সেজন্য আপনাদের অভিনন্দন। আপনাদের প্রতি আমাদের সবার সমর্থন থাকছে।

ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে নিরন্তর সংগ্রামে জামায়াতের অবদান নিঃসন্দেহে সবার স্মরণে থাকবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশ এবং জাতি নতুন করে আবার পুনর্গঠিত হবে, যখনই আমরা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠন করতে পারবো সেখানেও আপনাদের ভূমিকা থাকবে এটা আমরা আশা করি। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের সময় আপনাদের (জামায়াতে ইসলামী) কর্মীরা সাহসিকতার সঙ্গে গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করেছেন, প্রাণ দিয়েছেন। নেতারা কারাগারে আটক থেকেছেন, লড়াই সংগ্রামে উপস্থিত হয়েছেন।

আলী রীয়াজ বলেন, আমরা এক ঐতিহাসিক মুহূর্তে আছি। আমাদের এই সুযোগ যারা তৈরি করে দিয়েছেন, বীর শহীদরা, তাদের কাছে আমাদের ঋণ আছে। যাতে কোনো অবস্থাতেই এই সুযোগ হাতছাড়া না হয়ে যায়। যেনো এ সুযোগকে কেন্দ্র করে আমরা এমন এক বাংলাদেশ তৈরি করতে পারি, যেখানে কোনো অবস্থাতেই কাউকে নিপীড়নের মুখে না পড়তে হয়, বিচার বা বিচারবর্হিভূত ব্যবস্থার মধ্যে যেনো তাকে মোকাবিলা করতে না হয়। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই আমাদের যাত্রা।

তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য অর্ন্তবর্তী সরকারের পক্ষ থেকে যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সেই উদ্যোগ সরকারের উদ্যোগ নয়, এটি বাংলাদেশের মানুষের দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষার ফল। তারই অংশ হিসেবে অন্তর্বতী সরকারের পক্ষ থেকে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্র সংস্কারের প্রয়োজন এবং তাগিদ রাজনৈতিক দল, জনসমাজ, ছাত্র, সাধারণ মানুষের কাছ থেকে এসেছে। সেই প্রক্রিয়ায় আপনারা (জামায়াতে ইসলামী) আন্তরিকভাবে অংশগ্রহণ করায় আপনাদের ধন্যবাদ জানাই।

আমাদের সবার সাফল্য নির্ভর করছে সবার আন্তরিক প্রচেষ্টার মধ্যে উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, এই প্রক্রিয়ার মধ্যে আমরা সবাই একত্রে আছি। সকলে মিলে আমরা এই চেষ্টাটা করছি। এটা কোনো রাজনৈতিক দলের একক বিষয় নয়, এটা সবার বিষয়। জাতির আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করার জন্য আমাদের চেষ্টা। আমাদের লক্ষ্য এক। আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করছি। আমাদের সবার সাফল্য নির্ভর করছে সবার আন্তরিক প্রচেষ্টার মধ্যে।

এ অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় বৈঠকের জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।

মতবিনিময় সভায় জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে উপস্থিত ছিলেন দলটির নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের, সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, ড. হামিদুর রহমান আযাদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, জামায়াতের আইনজীবী শিশির মোহাম্মদ মনির। প্যানেল সদস্য হিসেবে আছেন মহিউদ্দিন সরকার।

 

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় নিউজ

সমাজসেবক, শিক্ষানুরাগী মো. জহিরুল হক স্মরণে আলোচনা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে জামাতের বৈঠক

ফ্যাসিবাদবিরোধী জুলাই আন্দোলনে জামায়াতের অবদান সবার স্মরণে থাকবে: আলী রীয়াজ

Update Time : ০৮:২৬:০৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫

ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে নিরন্তর সংগ্রামে জামায়াতে ইসলামীর অবদান নিঃসন্দেহে সবার স্মরণে থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

শনিবার (২৬ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় সংসদ ভবনের  এলডি হলে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে সূচনা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় তিনি আরও বলেছেন, বিচারিক এবং বিচারিক প্রক্রিয়ার বাইরে বিচারবর্হিভূতভাবে আপনাদের (জামায়াতে ইসলামী) নেতাকর্মীরা নিপীড়ন, অত্যাচারের শিকার হয়েছেন। তারপরও আপনারা সাহসিকতার সঙ্গে তা মোকাবিলা করেছেন, সেই সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছেন।আপনারা যেই ত্যাগ স্বীকার করে দেশকে ধ্বংসের থেকে রক্ষা করছেন এইজন্য জাতি আপনাদেরকে আজীবন স্বরণ রাখবে।  সেজন্য আপনাদের প্রতি আমাদের সবার সমর্থন থাকছে।

অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, গত ১৬ বছর ধরে যখন ফ্যাসিবাদী শাসনের নিপীড়ন বাংলাদেশকে জর্জরিত করে ফেলেছিল, সেই সময় জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা জীবন বাজি রেখে লড়াই করেছেন, গণতান্ত্রিক সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছেন। বিচারিক এবং বিচারিক প্রক্রিয়ার বাইরে বিচারবর্হিভূতভাবে আপনাদের (জামায়াতে ইসলামী) নেতাকর্মী নিপীড়ন, অত্যাচারের শিকার হয়েছেন। তারপরও আপনারা সাহসিকতার সঙ্গে তা মোকাবিলা করেছেন, সেই সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছেন। সেজন্য আপনাদের অভিনন্দন। আপনাদের প্রতি আমাদের সবার সমর্থন থাকছে।

ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে নিরন্তর সংগ্রামে জামায়াতের অবদান নিঃসন্দেহে সবার স্মরণে থাকবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশ এবং জাতি নতুন করে আবার পুনর্গঠিত হবে, যখনই আমরা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠন করতে পারবো সেখানেও আপনাদের ভূমিকা থাকবে এটা আমরা আশা করি। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের সময় আপনাদের (জামায়াতে ইসলামী) কর্মীরা সাহসিকতার সঙ্গে গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করেছেন, প্রাণ দিয়েছেন। নেতারা কারাগারে আটক থেকেছেন, লড়াই সংগ্রামে উপস্থিত হয়েছেন।

আলী রীয়াজ বলেন, আমরা এক ঐতিহাসিক মুহূর্তে আছি। আমাদের এই সুযোগ যারা তৈরি করে দিয়েছেন, বীর শহীদরা, তাদের কাছে আমাদের ঋণ আছে। যাতে কোনো অবস্থাতেই এই সুযোগ হাতছাড়া না হয়ে যায়। যেনো এ সুযোগকে কেন্দ্র করে আমরা এমন এক বাংলাদেশ তৈরি করতে পারি, যেখানে কোনো অবস্থাতেই কাউকে নিপীড়নের মুখে না পড়তে হয়, বিচার বা বিচারবর্হিভূত ব্যবস্থার মধ্যে যেনো তাকে মোকাবিলা করতে না হয়। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই আমাদের যাত্রা।

তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য অর্ন্তবর্তী সরকারের পক্ষ থেকে যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সেই উদ্যোগ সরকারের উদ্যোগ নয়, এটি বাংলাদেশের মানুষের দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষার ফল। তারই অংশ হিসেবে অন্তর্বতী সরকারের পক্ষ থেকে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্র সংস্কারের প্রয়োজন এবং তাগিদ রাজনৈতিক দল, জনসমাজ, ছাত্র, সাধারণ মানুষের কাছ থেকে এসেছে। সেই প্রক্রিয়ায় আপনারা (জামায়াতে ইসলামী) আন্তরিকভাবে অংশগ্রহণ করায় আপনাদের ধন্যবাদ জানাই।

আমাদের সবার সাফল্য নির্ভর করছে সবার আন্তরিক প্রচেষ্টার মধ্যে উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, এই প্রক্রিয়ার মধ্যে আমরা সবাই একত্রে আছি। সকলে মিলে আমরা এই চেষ্টাটা করছি। এটা কোনো রাজনৈতিক দলের একক বিষয় নয়, এটা সবার বিষয়। জাতির আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করার জন্য আমাদের চেষ্টা। আমাদের লক্ষ্য এক। আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করছি। আমাদের সবার সাফল্য নির্ভর করছে সবার আন্তরিক প্রচেষ্টার মধ্যে।

এ অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় বৈঠকের জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।

মতবিনিময় সভায় জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে উপস্থিত ছিলেন দলটির নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের, সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, ড. হামিদুর রহমান আযাদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, জামায়াতের আইনজীবী শিশির মোহাম্মদ মনির। প্যানেল সদস্য হিসেবে আছেন মহিউদ্দিন সরকার।