Rising Post

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন আর মাত্র ২ দিন পর,কমলা হ্যারিস নাকি ডোনাল্ড ট্রাম্প

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হলো বিশ্বের পরাশক্তি, আর সেই দেশের নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশ সহ সারাবিশ্বের সরকার ও জনগণ। কমলা হ্যারিস নাকি ডোনাল্ড ট্রাম্প- কে যাচ্ছেন হোয়াইট হাউসে? কিংবা ডেমোক্রেট না রিপাবলিকান- কোন দল নিয়ন্ত্রণ পাচ্ছে হাউস ও সিনেটের? এমন এক টেনশন ও আতঙ্ক মাথায় নিয়ে আমেরিকার কোটি কোটি ভোটার ভোটকেন্দ্রে যাবেন আগামী  ৫ নভেম্বর (মঙ্গলবার)। যদিও ইতোমধ্যে আগাম ভোট দিয়েছেন ৬ কোটি ৪০ লাখ ভোটার। প্রেসিডেন্টসহ ৪৩৫টি হাউস আসন ও ৩৪টি সিনেট আসনসহ নিউইয়র্ক স্টেটের অ্যাসেম্বলি ও সিনেট সদস্যদের ভোট হবে মঙ্গলবার। ভোট কেন্দ্র খুলবে সকাল ৬টায়। ভোট গ্রহণ চলবে একটানা রাত ৯টা পর্যন্ত। এদিকে এবার ভোটকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ৫ লক্ষাধিক বাংলাদেশি বিভক্ত হয়ে পড়েছেন কমলা ও ট্রাম্প শিবিরে। অতীতের নির্বাচনগুলোতে বাংলাদেশিরা একট্টা হয়ে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্টকেই ভোট দিত। তবে এবারে চিত্রটি পাল্টে গেছে। বাংলাদেশের দলীয় রাজনীতিকে অনুসরণ করে ভোটাররাও বিভক্ত। প্রকাশ্যেই বিএনপি ও জামায়াতের সমর্থকরা নেমেছেন ডেমোক্রেট প্রার্থী কমলা হ্যারিসের পক্ষে। আর আওয়ামী লীগের সমর্থকরা নেমেছেন ট্রাম্পের পক্ষে। দুইদিন আগে ট্রাম্প প্রকাশ্যে বাংলাদেশ নিয়ে মন্তব্য করায় আরও উৎসাহী হয়ে উঠেছেন আওয়ামী লীগের সমর্থকরা। তাদের মতে, ট্রাম্পের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির সম্পর্ক খুবই ঘনিষ্ঠ। পাশাপাশি হিন্দু-খ্রিস্টানদের ওপর বাংলাদেশে নির্যাতন হচ্ছে- এমন বিবৃতি দিয়েছেন ট্রাম্প। যা কিনা ড. ইউনূস সরকারের বিপক্ষেই অবস্থান ব্যক্ত করে। এদিকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রচারণার শেষ মুহূর্তে ডেমোক্রেট প্রার্থী কমলা হ্যারিস এবং রিপাবলিকান প্রার্থী সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একে অন্যের বিরুদ্ধে মিডিয়ার মাধ্যমে সাঁড়াশি আক্রমণ এবং পালটা আক্রমণ করে চলেছেন। কমলা হ্যারিস ট্রাম্পকে বলেছেন ‘ফ্যাসিস্ট’। জবাবে ট্রাম্প তাকে বলেছেন ‘স্টুপিড’। আগামী মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত টানা ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এর ফলে আজই (৩ নভেম্বর) শেষ হয়ে যাচ্ছে আগাম ভোট দেওয়ার সুযোগ। নির্বাচনে এবার হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলেই মত বিশ্লেষকদের। দুই প্রার্থীর পক্ষেই তাদের সমর্থকরা এখনও মাঠে রয়েছেন। বাংলাদেশি কমিউনিটির ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে বিভিন্ন যুক্তি তুলে ধরছেন। গত কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসী নীতি সম্পর্কে পক্ষে বিপক্ষে বিতর্ক চলছে। সেই সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রে আছেন, কিন্তু বৈধ ‘কাগজ’ পাননি- তাদের মধ্যে উদ্বেগ কাজ করছে বলে জানা গেছে। বিজয়ী হলে কমলা হ্যারিস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মতোই দুর্বল নীতি গ্রহণ করবেন বলেও ট্রাম্প সমর্থকরা যুক্তি দিচ্ছেন। আসন্ন নির্বাচনের দিন ভোটে কে এগিয়ে যাবেন তা নিয়েও নানা আলোচনায় মাঠ এখন উত্তপ্ত। তবে বাস্তবতা হচ্ছে- প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে গেলে তাকে ‘ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটে’ এগিয়ে থাকতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রে ৫০টি অঙ্গরাজ্যে মোট ইলেক্টোরাল ভোট আছে ৫৩৮টি। এর মধ্যে কোনো প্রার্থীকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে গেলে কমপক্ষে ২৭০টি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট পেতে হবে।
আবার সব অঙ্গরাজ্যে ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটের সংখ্যা একরকম নয়। যদি কোনো প্রার্থী সেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন না করতে পারেন, তাহলে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করার জন্য প্রতিনিধি পরিষদ এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করার জন্য সিনেট দ্বারা একটি অস্থায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। রাজ্যগুলোতে জনসংখ্যার ভিত্তিতে ইলেক্টোরাল ভোট নির্ধারণ হয়ে থাকে। নির্বাচনে ব্যাটল গ্রাউন্ড হিসেবে ৭টি স্টেটকে ধরা হয়ে থাকে। তাতে ইলেক্টোরাল ভোট আছে ৯৩টি। ধারণা করা হচ্ছে- ওয়াশিংটন ডিসিসহ ১৯টি অঙ্গরাজ্য থেকে কমলা হ্যারিস কমপক্ষে ২২৬টি ইলেক্টোরাল ভোট পেতে পারেন। ২৭০টি ভোট পেয়ে জয়ী হতে গেলে তাকে আরও ৪৪টি ভোট পেতে হবে। এক জরিপ অনুযায়ী ট্রাম্প এবং কমলা হ্যারিসের ব্যবধান পেনসিলভ্যানিয়াতে খুবই কম। জর্জিয়া এবং নর্থ ক্যারোলিনাতে এই ব্যবধান আরও একটু বেশি। ২৪টি অঙ্গরাজ্য রিপাবলিকানদের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। সেখান থেকে ট্রাম্প কমপক্ষে ২১৯টি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট পেতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট আছে টেক্সাসে, ৪০টি। সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এখন নিউইয়র্ক সিটির ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনে সমাবেশ করে জনসমর্থন চাঙ্গা করেছেন। তবে এক জরিপে দেখা গেছে, নিজের জন্মস্থান নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যেই ট্রাম্পের জয়ের সম্ভাবনা খুবই কম। ২০২০ সালের নির্বাচনে সেখানে তিনি ৪০ শতাংশেরও কম ভোট পেয়েছিলেন। এই অঙ্গরাজ্যেই ২০২৪ সালে তাকে ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত করা হয়।
১৯৬১ সালের ২৩তম অ্যামেন্ডমেন্টের মাধ্যমে কলম্বিয়ার ফেডারেল ডিস্ট্রিক্টকে তিনটি ইলেক্টোর প্রদান করা হয়। যার ফলে মোট ইলেক্টোরের সংখ্যা ৫৩৮-এ পৌঁছে যায়। সিনেটর এবং প্রতিনিধিসহ ফেডারেল অফিসধারীরা এই ভোটার হতে পারেন না বিগত ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট যেই হোক না কেন নির্বাচনের পর তারা দেশে ও জনগণের স্বার্থে  মিলেমিশে কাজ করে।    
Facebook
Pinterest
LinkedIn
WhatsApp
Edit Content
Scroll to Top

শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১

ভিডিও স্টোরি

ভিডিও স্টোরি

ভিডিও স্টোরি

ভিডিও স্টোরি

ভিডিও স্টোরি