হিজলা উপজেলা প্রতিনিধি:বরিশালের হিজলা উপজেলায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ‘কিশোর গ্যাং। ২১এপ্রিল (সোমবার) সন্ধ্যা ৬ টায় (তুলাতলী) মৌলভীরহাটে দুই কিশোরকে পিটিয়ে নদীতে ফেলে দেয় আরেকদল কিশোর।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কিশোর গ্যাং প্রধান নাবিলের নেতৃত্বে কাউরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির স্কুল পড়ুয়া ছাত্র নিশাত (১২)ও ওমর (১৪)নামের দুই ছাত্রের উপর হামলা করলে রক্ষা পেতে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে। সেখানেও ইটপাটকেল ছোঁড়া হয় দুই স্কুল ছাত্রের ওপর।
স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে কিছুদূর পৌঁছে দেয়া হলেও আবারও ধাওয়া দেয়া হয় ছাত্রদের।
আরও পড়ুন
বরিশালের হিজলার কাউরিয়া মাদ্রাসার কমিটি অনুমোদন
তখন তারা রাস্তার পাশের কাসেমুল উলুম মাদ্রাসায় আশ্রয় নেয়। একটি কক্ষে তাদের তালাবদ্ধ করে রাখলেও রেহাই মেলেনি। বন্ধু পরিচয়ে কয়েকজন কক্ষে ঢুকে মারপিট করে দুজনকে। এসময় শিক্ষক ও মাদ্রাসা ছাত্ররা এগিয়ে এলে সরে যায় হামলাকারীরা।
হামলার শিকার হওয়া ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র নিশাত ও ওমর এর কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন ‘প্রায় এক বছর আগে আমরা ডাক্তার খাদেম হোসেন স্কুলে স্পোর্টস দেখতে যাই তখন নাবিল ও এর সাথে থাকা অন্যান্য সদস্যরা আমাদেরকে জিজ্ঞেস করে আমরা কোথা থেকে এসেছি। আমি ও আমার সাথে থাকা বন্ধুরা তাদেরকে বলি কাউরিয়া স্কুল থেকে এসেছি। তারা জানতে চায় কি জন্য এসেছ-আমি জানাই স্পোর্টস দেখতে, তারা সেখানে কর্তৃত্ব ভাব নিয়ে আমাদেরকে তিরস্কার করে, শুধু তাই নয় এক পর্যায়ে গায়ে হাত তোলে। বিষয়টি তখন স্থানীয় লোকজন মীমাংসা করে দেন । পরবর্তীতে আবার কিছুদিন পরে একই স্কুলে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ছাড়লে সেই টুর্নামেন্টে আমরা অংশগ্রহণ করি, কিন্তু পূর্বের কথা ধরে আমাদেরকে আবারো লাঞ্ছিত করে এবং গায়ে হাত তোলে। ঠিক তার এক বছর পরে নাবিল কাউরিরা স্কুলের সামনে আমাকে দেখতে পায় তখন সে আমাকে উদ্দেশ্য করে গালি দিলে ওমর তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করে। ঠিক তার কিছুক্ষণ পরেই স্থানীয় ছেলেপেলেদের সঙ্গে নিয়ে পুনরায় আমাকে ও ওমরকে মারধর করে’। তখন বিষয়টি পুলিশ সদস্য এবং এক সাংবাদিকের উপস্থিতিতে মীমাংসা করে দেয়া হয় বলে দাবি করে দুই কিশোর।
তারা আরও জানায়, ‘ তখন ওখান থেকে নাবিল চলে যায়।
পরবর্তীতে আমি ও ওমর
দুজনে (তুলাতলী) মৌলভীর হাটে যেহেতু মেলা চলে তাই আমরা ওখানে মেলা দেখতে যাই, তখন নাবিল ও তার বাহিনী আমাদেরকে দেখে ফেলে এবং ধাওয়া করে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে হামলা চালায়। আমরা নিরুপায় হয়ে দৌড়ে গিয়ে নদীতে ঝাঁপ দেই। কিন্তু এতেও শেষ রক্ষা হয়নি আমাদের উপর ছোঁড়া হয় ইট। পরবর্তীতে স্থানীয়দের সহায়তায় আমরা উদ্ধার হয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেই, তখন তারা আবারও আমাদেরকে ধাওয়া করে আমরা দৌড়ে কাশিমুল উলুম মাদ্রাসায় আশ্রয় নেই।কিন্তু তাতেও তারা শান্ত হয়নি, মাদ্রাসার ভিতর গিয়েও আমাদেরকে মারধর করেছে। শুধু তাই নয় আমাদের সাথে থাকা দুইটি মোবাইল ও টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।’
অভিযুক্ত নাবিলের বড় ভাই নাহিদের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি প্রতি উত্তরে বলেন ‘যা পারেন করেন’।
নাবিল হিজলা উপজেলার কবির ফকিরের ছোট ছেলে। তার গ্রাম বরিশালের হিজলা উপজেলার গুয়াবাড়িয়া ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডে।
এদিকে, ঘটনার ন্যায় বিচার চেয়েছে ভুক্তভোগী পরিবার।