আন্তর্জাতিক ডেস্ক :বর্তমানে জাপানে হাজার হাজার বয়স্ক নাগরিক পরিবার ছাড়াই নিজেদের বাড়িতে একা থাকেন।
একাকিত্বই গ্রাস করে নিচ্ছে বাঁচার ইচ্ছে। জাপান ভুগছে অতি-বিচিত্র এক সংকটে! জীবন-সায়াহ্নে পৌঁছে দেখছেন, পাশে থাকার মতো কেউ নেই। হাত ধরার মতো, কথা বলার মতো কেউ নেই। আপনি পুরোপুরি একা! ঠিক এই সমস্যাই অতি প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে উদীয়মান সূর্যের দেশে।
ন্যাশনাল পুলিশ এজেন্সির পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে অর্থাৎ প্রথম ছমাসের মধ্যে দেশের অন্তত ৪০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে নিজেদের বাড়িতে, সম্পূর্ণ একাকী অবস্থায়। শুধু তাই নয়, বর্তমানে জাপানে হাজার হাজার বয়স্ক নাগরিক পরিবার ছাড়াই নিজেদের বাড়িতে একা থাকেন। সরকারি হিসাবে সংখ্যাটা মোট ৩৭ হাজার ২২৭ জন। ফলে স্বাভাবিকভাবেই মৃত্যুর সময়ও যে তাঁদের পাশে কেউ থাকবেন না, তা বলাই বাহুল্য। এতেই শেষ নয়।
ঝুঁকি সত্ত্বেও অর্থের বিনিময়ে অস্থায়ী পর্যটককে বিবাহ করেন ইন্দোনেশিয়ায় যুবতীরা
চমকপ্রদ ব্যপার হল, রাষ্ট্রসংঘের তথ্য বলছে, এই নাগরিকদের মধ্যে অন্তত ৭০ শতাংশেরই বয়স ৬৫ বছর বা তার ঊর্ধ্বে। আবার যে ৪০ হাজার মানুষের মৃত্যুর পরিসংখ্যান ন্যাশনাল পুলিশ এজেন্সির ডেটা থেকে মিলেছে, তার মধ্যে অন্তত ৩ হাজার ৯৩৯টি মৃত্যুর হদিশ মিলেছে এক মাস পরে। আর ১৩০টি দেহের অস্তিত্ব মিলেছে এক বছর পেরনোর পর। মানে, মৃত্যুর খবরটুকু পাওয়া বা দেওয়ার মতো কেউ নেই। না ঘরে, না আশপাশে।
তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ছমাসে মৃতের মধ্যে ৭ হাজার ৪৯৮টি দেহের গড় বয়স ৮৫ বছর বা তারও বেশি। ৫ হাজার ৯২০টি দেহের বয়স ৭৫ বছর থেকে ৭৯ বছরের মধ্যে আর ৫ হাজার ৬৩৫টি দেহের বয়স ৭০ বছর থেকে ৭৪ বছরের মধ্যে। ন্যাশনাল পুলিশ এজেন্সি মনে করছে, এই চাঞ্চল্যকর পরিসংখ্যান প্রকাশ্যে এলে তার থেকে শিক্ষা নেবেন জাপানের নাগরিকরা। বয়স্কদের একাকীত্বের সমস্যা দূর করতে পদক্ষেপও করবেন।
তবে তা কতদূর সম্ভব হবে, না এই সমস্যা আগামী ছমাসে আরও বড় আকার ধারণ করবে, তা সময়ই বলবে। আপাতত খারাপ কিছুই আশঙ্কা করছে জাপানিজ ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ পপুলেশন অ্যান্ড সোশাল সিকিউরিটি রিসার্চ। তাদের পূর্বাভাস, ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে বয়স যাঁরা একা থাকেন, এমন লোকের সংখ্যা ২০৫০ সালে বাড়তে বাড়তে গিয়ে পৌঁছবে প্রায় ১০.৮ মিলিয়নে। অর্থাৎ শিয়রে যে মহাসংকট, তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে জাপান।