নিজস্ব প্রতিবেদক :পুঁজিবাজারের চলমান মন্দা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করতে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বৈঠক করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।ধারাবাহিক দরপতন , আস্থাহীনতা ও ক্রমাগত দরপতনের প্রেক্ষাপটে অবশেষে দেশের পুঁজিবাজারের অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। শনিবার (১৭ মে) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিএসইসির প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে কমিশনের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি বাজারের প্রধান নিয়ামক প্রতিষ্ঠানগুলোর শীর্ষ প্রতিনিধি ও অংশীজনরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। উপস্থিত ছিলেন কমিশনার মোঃ মোহসিন চৌধুরী, মোঃ আলী আকবর ও ফারজানা লালারুখসহ নির্বাহী পরিচালক ও পরিচালকবৃন্দ। অংশগ্রহণ করেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসি (ডিএসই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসি (সিএসই), ডিএসই ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ), বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) ও ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) শীর্ষ প্রতিনিধিরা।
ডিএসই চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম, সিএসই চেয়ারম্যান এ কে এম হাবিবুর রহমান, ডিবিএ সভাপতি সাইফুল ইসলাম, ডিএসই পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন, শাকিল রিজভী, রিচার্ড ডি রোজারিও, ভারপ্রাপ্ত এমডি সাত্ত্বিক আহমেদ শাহ, ডিবিএর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. সাইফুদ্দিন, বিএমবিএ সভাপতি মাজেদা খাতুন, আইসিবি ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিরঞ্জন চন্দ্র দেবনাথ ও মহাব্যবস্থাপক মাহমুদা আক্তার সভায় অংশ নেন।
বৈঠকে পুঁজিবাজারকে দীর্ঘমেয়াদে স্থিতিশীল ও কার্যকর করতে বিভিন্ন প্রস্তাব ও সুপারিশ উত্থাপন করা হয়। আলোচনায় উঠে আসে কর কাঠামো সংস্কারের বিষয়টি। অংশীজনরা তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির করহারে অন্তত ১০ শতাংশ ব্যবধান বজায় রাখার দাবি জানান।
এছাড়া এক লাখ টাকা পর্যন্ত লভ্যাংশ আয়ে কর অব্যাহতি, বিও হিসাব রক্ষণাবেক্ষণ ফি এবং ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স বাতিল, ব্রোকারদের টার্নওভারে আরোপিত অগ্রিম আয়কর (AIT) কমানো, রাষ্ট্রায়ত্ত ও ভালো মৌলভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানিকে তালিকাভুক্ত করার উদ্যোগ, সরকারি সিকিউরিটিজ (G-Sec) এক্সচেঞ্জ প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসা এবং বিনিয়োগকারীর সুরক্ষা জোরদারের বিষয়গুলো গুরুত্ব পায়।
আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিরঞ্জন চন্দ্র দেবনাথ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোর চলতি অর্থবছরের অর্জিত আয়ের ২০ শতাংশ সংরক্ষণ করে বাকি ৮০ শতাংশ ইউনিটহোল্ডারদের মধ্যে লভ্যাংশ হিসেবে বিতরণের প্রস্তাব দেন।
সভায় অংশীজনদের পরামর্শকে মূল্যায়ন করে বিএসইসি ঘোষণা দেয়, এখন থেকে প্রতি মাসের শেষ বৃহস্পতিবার নিয়মিতভাবে সমন্বয় সভা আয়োজন করা হবে। এতে অংশীজনদের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপ ও সহযোগিতার মাধ্যমে বাজার ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও কার্যকারিতা বৃদ্ধির প্রত্যাশা প্রকাশ করে কমিশন।
বৈঠক শেষে অংশগ্রহণকারীরা জানান, এ ধরনের উন্মুক্ত আলোচনা বাজার সংস্কারের পথে একটি ইতিবাচক অগ্রগতি। তবে প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের ওপরই নির্ভর করবে বাজারে আস্থার পুনঃপ্রতিষ্ঠা।