০১:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫

সংকটাপন্ন অবস্থায় জবি শিক্ষার্থী প্রিয়ার দিন কাটছে

  • রিপোর্টার
  • Update Time : ০৬:১৯:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ জানুয়ারী ২০২৫
  • ২৫ Time View

ডেক্স রিপোর্টঃজগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে লোক প্রশাসন বিভাগে ( অনার্স ) দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যায়নরত মেধাবী শিক্ষার্থী প্রিয়া রানী দাস। ইতিমধ্যে জবিতে পড়ালেখায় কেটেছে তার দুইটি বছর। সে শিঘ্রই তৃতীয় বর্ষে পদার্পণ করবে।

গৌরীপুর সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজে লটারীর মাধ্যমে যোগ্য প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ 

ময়মনসিংহ জেলাধীন গৌরীপুর পৌর শহরের কালীপুর মধ্যম তরফ এলাকার একটি জরাজীর্ণ ভাড়া বাসায় তাদের পরিবারের ৪ জনের বসবাস।

প্রিয়ার বাবা দিলীপ দাস আগে গৃহ শিক্ষকতা করতেন কিন্তু পুরাতন সিলেবাস পরিবর্তন হওয়ায় তিনি সেই পেশা ছেড়ে দিয়ে সংসারের হাল ধরে রাখার জন্য কাজ করেন দলিল লেখকদের সহায়ক হিসেবে। একটি স্থানীয় পত্রিকাতেও লেখালেখি করেন তিনি। এসকল কাজের বিনিময়ে
যা আয় করেন, তা দিয়ে সংসার ঠিক মতো চলে না তাঁর। মেয়ের পড়ালেখায় বেশ অর্থ খরচ হয়েছে বিগত দুইটি বছরে । রয়েছে আরও সন্তান, তাদের পড়ালেখা নিয়েও দুঃচিন্তা করেন দিলীপ দাস। বর্তমানে সংসারের অবস্থা সংকটাপন্ন হলেও মেয়ের উচ্চ শিক্ষার ব্যাপারে তিনি দীর্ঘ আশাবাদী।

রবিবার  ( ৫ই জানুয়ারী)  এ ব্যাপারে দিলীপ কুমার দাসের সঙ্গে কথা হয় রাইজিং পোস্ট এর সাথে । তিনি বলেন, মেয়েকে ভর্তির জন্য টাকা ম্যানেজ করতে সমাজের বিত্তবান ও হৃদয়বান ব্যক্তিদের সহায়তা নিতে হয়েছিল তাঁর। গত ২৯ ডিসেম্বর ২০২২ সনে মেয়ের ভর্তির শেষ তারিখ ছিল কিন্তু সেইদিন কোনভাবেই যখন তিনি টাকা যোগার করতে পারছিলেন না, তখনই সাংবাদিকদের কাছে এ ভর্তির কথা প্রকাশ করেন তিনি এবং ২৮ ডিসেম্বর ২০২২ বহু জাতীয় সংবাদপত্রে প্রিয়ার দৈন্যতার বিষয়ে লেখালেখি হয়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। এ সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর পরই অনেকেই তার প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়ালে প্রিয়া জবিতে ভর্তি হতে সক্ষম হন। ভর্তিকালীন সময়ে মেধা তালিকায় ৫৩ তম স্থানে ছিলেন প্রিয়া।প্রিয়ার বাবা  বলেন, আমার ঘরে জন্ম নেওয়ায় যেন ওর অন্যায় হয়ে গেছে। কোনো ধনীর ঘরে জন্ম নিলে ওর জীবনটা এমন হতো না। টাকার অভাবে দিশেহারা এখন আমরা। আপনারা সবাই আমার মেয়ের  জন্য সাহায্য করুন।

প্রিয়া বলেন, আমার পড়ালেখা শুরু থেকেই বাবা কষ্ট করে সংসার চালান আর আমি সেই কষ্টের মাঝেই পড়ালেখা করেছি। আমি বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন নিয়েই পড়ালেখা করছি । এনজিও (NGO) সমিতি থেকে উত্তোলনকৃত ঝণ ও নিকট আত্মীয় স্বজনের কাছে থেকে ধারকর্জ করে বাবা আমার বড় বোনের বিবাহের ব্যবস্থা করেছেন । সেই ঝণ ও ধারকর্জের টাকা পরিশোধ ও আমার পড়ালেখার খরচের টাকা তার পক্ষে যোগার করা কোন মতেই সম্ভব হচ্ছে না তাই নিরুপায় হয়ে আমি আবারও অধ্যায়নরত অবস্থায় সাংবাদিকবৃন্দসহ সুশীল সমাজের স্মরণাপন্ন হলাম। মেয়ে হিসেবে আমি আমার পিতামাতার জন্য গর্ববোধ করি এবং সেই সাথে দেশ ও প্রবাস থেকে বিগত সময়ে যারা আমার জন্য মানবতার হাত প্রসস্থ করেছিলেন এবং আজও সেই আশাবাদ নিয়েই গণমাধ্যমে আশ্রিত হয়েছি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় নিউজ

নির্বাচন কমিশন পূর্ণগঠন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবিতে ইসির সামনে বিক্ষোভ করবে এনসিপি

সংকটাপন্ন অবস্থায় জবি শিক্ষার্থী প্রিয়ার দিন কাটছে

Update Time : ০৬:১৯:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ জানুয়ারী ২০২৫

ডেক্স রিপোর্টঃজগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে লোক প্রশাসন বিভাগে ( অনার্স ) দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যায়নরত মেধাবী শিক্ষার্থী প্রিয়া রানী দাস। ইতিমধ্যে জবিতে পড়ালেখায় কেটেছে তার দুইটি বছর। সে শিঘ্রই তৃতীয় বর্ষে পদার্পণ করবে।

গৌরীপুর সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজে লটারীর মাধ্যমে যোগ্য প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ 

ময়মনসিংহ জেলাধীন গৌরীপুর পৌর শহরের কালীপুর মধ্যম তরফ এলাকার একটি জরাজীর্ণ ভাড়া বাসায় তাদের পরিবারের ৪ জনের বসবাস।

প্রিয়ার বাবা দিলীপ দাস আগে গৃহ শিক্ষকতা করতেন কিন্তু পুরাতন সিলেবাস পরিবর্তন হওয়ায় তিনি সেই পেশা ছেড়ে দিয়ে সংসারের হাল ধরে রাখার জন্য কাজ করেন দলিল লেখকদের সহায়ক হিসেবে। একটি স্থানীয় পত্রিকাতেও লেখালেখি করেন তিনি। এসকল কাজের বিনিময়ে
যা আয় করেন, তা দিয়ে সংসার ঠিক মতো চলে না তাঁর। মেয়ের পড়ালেখায় বেশ অর্থ খরচ হয়েছে বিগত দুইটি বছরে । রয়েছে আরও সন্তান, তাদের পড়ালেখা নিয়েও দুঃচিন্তা করেন দিলীপ দাস। বর্তমানে সংসারের অবস্থা সংকটাপন্ন হলেও মেয়ের উচ্চ শিক্ষার ব্যাপারে তিনি দীর্ঘ আশাবাদী।

রবিবার  ( ৫ই জানুয়ারী)  এ ব্যাপারে দিলীপ কুমার দাসের সঙ্গে কথা হয় রাইজিং পোস্ট এর সাথে । তিনি বলেন, মেয়েকে ভর্তির জন্য টাকা ম্যানেজ করতে সমাজের বিত্তবান ও হৃদয়বান ব্যক্তিদের সহায়তা নিতে হয়েছিল তাঁর। গত ২৯ ডিসেম্বর ২০২২ সনে মেয়ের ভর্তির শেষ তারিখ ছিল কিন্তু সেইদিন কোনভাবেই যখন তিনি টাকা যোগার করতে পারছিলেন না, তখনই সাংবাদিকদের কাছে এ ভর্তির কথা প্রকাশ করেন তিনি এবং ২৮ ডিসেম্বর ২০২২ বহু জাতীয় সংবাদপত্রে প্রিয়ার দৈন্যতার বিষয়ে লেখালেখি হয়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। এ সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর পরই অনেকেই তার প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়ালে প্রিয়া জবিতে ভর্তি হতে সক্ষম হন। ভর্তিকালীন সময়ে মেধা তালিকায় ৫৩ তম স্থানে ছিলেন প্রিয়া।প্রিয়ার বাবা  বলেন, আমার ঘরে জন্ম নেওয়ায় যেন ওর অন্যায় হয়ে গেছে। কোনো ধনীর ঘরে জন্ম নিলে ওর জীবনটা এমন হতো না। টাকার অভাবে দিশেহারা এখন আমরা। আপনারা সবাই আমার মেয়ের  জন্য সাহায্য করুন।

প্রিয়া বলেন, আমার পড়ালেখা শুরু থেকেই বাবা কষ্ট করে সংসার চালান আর আমি সেই কষ্টের মাঝেই পড়ালেখা করেছি। আমি বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন নিয়েই পড়ালেখা করছি । এনজিও (NGO) সমিতি থেকে উত্তোলনকৃত ঝণ ও নিকট আত্মীয় স্বজনের কাছে থেকে ধারকর্জ করে বাবা আমার বড় বোনের বিবাহের ব্যবস্থা করেছেন । সেই ঝণ ও ধারকর্জের টাকা পরিশোধ ও আমার পড়ালেখার খরচের টাকা তার পক্ষে যোগার করা কোন মতেই সম্ভব হচ্ছে না তাই নিরুপায় হয়ে আমি আবারও অধ্যায়নরত অবস্থায় সাংবাদিকবৃন্দসহ সুশীল সমাজের স্মরণাপন্ন হলাম। মেয়ে হিসেবে আমি আমার পিতামাতার জন্য গর্ববোধ করি এবং সেই সাথে দেশ ও প্রবাস থেকে বিগত সময়ে যারা আমার জন্য মানবতার হাত প্রসস্থ করেছিলেন এবং আজও সেই আশাবাদ নিয়েই গণমাধ্যমে আশ্রিত হয়েছি।